রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে দেশের স্বার্থে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দেশনায়ক তারেক রহমান। তিনি বলেন, আমরা বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। বিভিন্ন মত থাকবেই, কিন্তু সেই মতভেদ যেন জাতির অগ্রগতির অন্তরায় না হয়। অনেক হয়েছে-এবার আসুন, সবাই মিলে এক জায়গায় আসি। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র প্রবীণ নেতা মোতালেব আকনের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলেই বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছে। এটাই প্রমাণ করে-জনগণই বিএনপির শক্তি, জনগণই আমাদের আস্থার প্রতীক। বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা মোতালেব আকনের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, তিনি হুইলচেয়ারে বসে আজকের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের আঘাতে তাঁর এই অবস্থা হয়েছে, এটি আমাদের জন্য বেদনার হলেও প্রেরণারও উৎস।
তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছরে বহু নেতা-কর্মী অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নির্যাতিত হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। অনেক হয়েছে-এবার আমরা মতভেদ কমিয়ে দেশের ভবিষ্যতের জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। দেশের তরুণদের উদ্দেশে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আগামী দিনে আমরা মেধার ভিত্তিতে দেশ ও জাতিকে গড়ে তুলব। যারা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে, তারা এগিয়ে যাবে; তবে যারা পিছিয়ে পড়বে, তাদের জন্যও সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। যাতে দেশের প্রতিটি তরুণ সৎ পথে নিজের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। তিনি আরও যোগ করেন, “লক্ষ-কোটি তরুণ, নারী-পুরুষ-সবাই যেন বেঁচে থাকার যুদ্ধে টিকে থাকতে পারে, সেইভাবেই আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি।
স্বাস্থ্যসেবা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের হাসপাতালের ফ্লোরে অসংখ্য মানুষ চিকিৎসার জন্য কষ্টে পড়ে থাকে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রত্যেকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাবে। কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লক্ষ-কোটি কৃষক প্রতিকূলতার মধ্যেও মাঠে কাজ করছেন বলেই দেশের ২০ কোটি মানুষ খেতে পাচ্ছে। এই কৃষক ও গ্রামীণ মা-বোনদের স্বাবলম্বী করতে আমরা বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক মতভেদের কারণে যেন কেউ আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, এমন একটি মানবিক রাজনীতি গড়ে তুলতে চাই।
অনেক আন্দোলন হয়েছে-এবার আসুন, আমরা প্রতিযোগিতা করি দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায়, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে। দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন প্রবীণ নেতা মোতালেব আকন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বিষয়টি প্রচারিত হলে তা তারেক রহমানের নজরে আসে। এরপর তিনি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনকে নির্দেশ দেন যোগাযোগের জন্য।
এর ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেলে আয়োজিত এই ভার্চুয়াল সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, কালের কণ্ঠের যুগ্ম সম্পাদক ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাংবাদিক নেতা হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম খান, সদস্য সচিব এস এম সাইদুল ইসলাম কিসমত, যুগ্ম আহ্বায়ক এলিজা জামান, সদস্য আলমগীর হোসেনসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন। সাক্ষাৎ শেষে নেতারা জানান, তারেক রহমানের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র একজন প্রবীণ নেতার ইচ্ছা পূরণ নয়-বরং এটি তৃণমূল কর্মীদের প্রতি তাঁর আন্তরিকতা ও ভালোবাসার প্রতীক। তারা বলেন, দেশনায়কের এই পদক্ষেপ দলের ঐক্য সুসংহত করার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
https://slotbet.online/