বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের চত্বর থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর অবৈধ এ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করেন।
সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের জন্য রোগীদের আহ্বান জানিয়ে নোটিশ টাঙানো হয়েছে জরুরি বিভাগে। এ জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং জরুরি প্রয়োজনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পেতে চালু করা হয়েছে হটলাইন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে খুশি রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। কয়েকজন রোগীর স্বজন জানান, রোগীরা এখন ইচ্ছেমতো অ্যাম্বুলেন্স–সেবা নিতে পারবেন, বন্ধ হবে হয়রানি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সিন্ডিকেট ভেঙে দিল। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হতো রোগী ও স্বজনদের। তাঁরা জানান, ঢাকা থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সে বরিশাল থেকে রোগী নিলে খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। অথচ সিন্ডিকেটের বাধায় সেই অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে ঢুকতে পারত না। রোগী বহনে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে হলেও সিন্ডিকেটকে দিতে হতো তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন। না দিলে হাসপাতালের সিন্ডিকেটের কাছ থেকেই ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে বাধ্য হতেন রোগীর স্বজনেরা।
সম্প্রতি হাসপাতালে এমনই এক ঘটনার শিকার হন উজিরপুর উপজেলার এক শিশুর স্বজনেরা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিতে গেলে বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন শিশুর স্বজন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখন থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান করতে পারবে না। রোগী নামিয়ে দ্রুত চলে যেতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি সাতটি অ্যাম্বুলেন্সের পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে জরুরি বিভাগের সামনে। সরকারি ভাড়া তালিকাও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। শহরের মধ্যে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ৩০০ টাকা এবং শহরের বাইরে গেলে প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে। সরকারি ভাড়া বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের তুলনায় কয়েক গুণ কম। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পেতে রোগীদের যোগাযোগ করতে হবে ০১৭৮২৭৫৫৫০০ নম্বরে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, রোগীদের জিম্মি করে কোনো সিন্ডিকেট চলবে না। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই অভিযোগ পাচ্ছিলাম। তাই অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স সরিয়ে দিয়ে স্ট্যান্ডের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো চালক বা মালিক নির্দেশনা উপেক্ষা করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
https://slotbet.online/