• সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৭ অপরাহ্ন

ববির উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি করতে উপাচার্যকে চাপ

এনামুল হক, ববি প্রতিনিধি / ২৬ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য প্রায় ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এই প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) হিসেবে তিনজন শিক্ষকের নাম প্রস্তাব করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম। অভিযোগ রয়েছে, সাদা দলের চাপে তাঁদের নাম প্রস্তাব করেছেন উপাচার্য; যদিও তাঁদের কারিগরি দক্ষতা নেই। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ দাবি করেছে, উন্নয়ন প্রকল্পে নন-টেকনিক্যাল লোককে পিডি নিয়োগ দেওয়া হলে কাজের মানে ঘাটতি থাকতে পারে।

উপাচার্যের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রথমে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার নাম আসে। উপাচার্য তিনজন শিক্ষকের নাম মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করেন। তাঁরা হলেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাছির আবদুল আলিম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান সোহাগ এবং কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক বলেন, আব্দুল আলিম এবং মেহেদী হাসান ৫ আগস্টের পর নিজেদের সাদা দলের শিক্ষক হিসেবে জাহির করে নানা সেক্টরে প্রভাব খাটাচ্ছেন। কিন্তু ছাত্র আন্দোলন কিংবা উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে তাঁদের অংশগ্রহণ ছিল না। তা ছাড়া ববিতে সাদা দলের কোনো কমিটিই নেই। আর হিসাববিজ্ঞান কিংবা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকেরা উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা কতখানি যাচাই করবেন, তা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাছির আবদুল আলিম বলেন, পিডি নিয়োগের বিষয়ে ওভাবে জানা নেই। অবশ্য তাঁর কাছে সিভি চাওয়া হয়েছে। তিনিও মনে করেন, শিক্ষকতা, সাংবাদিকতা, সব জায়গাতেই দক্ষ লোক থাকা দরকার। এ প্রকল্পেও দক্ষ লোক প্রয়োজন। আবদুল আলিম আরও বলেন, ববিতে তিনি সাদা দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমনটি নয়। কারণ এখানে রাজনীতি নিষিদ্ধ। তবে সাদা দলের কিছু লোক তো ববিতে আছেই।

কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, পিডি হওয়ার জন্য উপাচার্য সিভি চাওয়ায় সিভি দিয়েছেন। কিন্তু এসব বিষয়ে তাঁর আগ্রহ নেই।

এ ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, ‘ফিজিবিলিটি স্টাডির (সম্ভাব্যতা যাচাই) জন্য  আমরা পিডি নিয়োগের পর্যায়ে আছি। এ জন্য তিনজনের নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সাদা দলের চাপে তিনজনের নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন কি না, প্রশ্ন করলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, গোপনীয়তার স্বার্থেই তাঁদের নাম প্রকাশ করবেন না। তবে কাজটি স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হবে। ছাত্রদেরও এ কাজে নজর রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের উপপ্রধান মো. মুর্শিদ আবেদিন বলেন,  সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে নন-টেকনিক্যাল লোককে পিডির দায়িত্ব দেওয়া হলে কাজে মানের ঘাটতি থাকতে পারে। কেননা অনেক ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। কাজের ড্রইং এবং ডিজাইন যেভাবে করা হবে, তার ত্রুটিবিচ্যুতি প্রকৌশল বিভাগ ছাড়া অন্য কারও বোঝার উপায় নেই। তাই উন্নয়ন প্রকল্পের কথা মাথায় রেখে পিডি নিয়োগ করা দরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/