• বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

বরিশালের গ্রামীণ সড়কগুলো মৃত্যুফাঁদ

স্টাফ রিপোর্টার / ২৮ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

বরিশাল বিভাগের গ্রামীণ সড়কগুলো এখন যেন চলন্ত মৃত্যু ফাঁদ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া হাজার কিলোমিটার রাস্তায় প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ আরও চরমে পৌঁছেছে। বিভাগজুড়ে ক্ষতবিক্ষত এসব সড়ক সংস্কারে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছয়টি জেলার মধ্যে পিরোজপুর, বরগুনা ও বরিশালের গ্রামীণ ও পৌর সড়কগুলোর অবস্থা সবচেয়ে করুণ। যত্রতত্র খানাখন্দে ভরা এসব সড়কে মানুষ চলাচল করছে চরম ঝুঁকি নিয়ে।

রিশাল নগরের কাশিপুর চৌমাথা সড়ক, বাবুগঞ্জ বাইপাস ও লাকুটিয়া সড়কে বেহাল অবস্থা। প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারী ও যানবাহন। স্থানীয়রা বলছেন, এমন সড়কে চলাচল করা মানে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি নেয়া।
 
বরগুনার প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার সড়কের অবস্থা একই রকম। খানাখন্দে ভরা অনেক সড়ক স্থানীয়রা নিজেরাই মেরামতের চেষ্টা করছেন, তবে কিছু জায়গায় যানবাহন গর্তে আটকে পড়ায় দীর্ঘ সময় ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
একই দুর্দশা দেখা গেছে পিরোজপুর পৌরসভাতেও। ১৯৯০ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও আজও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানকার সড়কে। পৌরসভায় ৮০ কিলোমিটার (কি.মি) কার্পেটিং, ৪৮ কি.মি পাকা, ১৫০ কি.মির বেশি হেরিংবন্ড ও ৬৮ কি.মি কাঁচা সড়কের অধিকাংশই বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্নীতি, লুটপাট ও দলীয় কোন্দলের কারণে গত কয়েক বছরে কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। বর্ষা এলে এসব রাস্তায় পানি জমে আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। সড়কের কারণে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় অনেকেই জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এলজিইডির বরিশাল অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রহমত-ই-খুদা বলেন, বিভাগের ৬ জেলায় এক হাজার ২৪ কিলোমিটার সড়কের জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫৯৩ কোটি টাকা প্রয়োজন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন দফতরে জানিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই বরাদ্দ আসবে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে মোট সড়কের সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৩২টি, যার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৭ হাজার ৮০৪ কিলোমিটার। এর বড় একটি অংশই এখন বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে।
টিআইবি বরিশালের সভাপতি অধ্যাপক গাজী জাহিদ হোসেন বলেন, যতদিন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত না হবে, ততদিন এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়। সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে।
 
সাধারণ মানুষ বলছেন, উন্নয়ন কিংবা রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয় এখন তাদের একমাত্র চাওয়া চলাচলের উপযোগী নিরাপদ রাস্তা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/