• শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা রোদ-বৃষ্টিতে

দর্পন ডেস্ক / ৩২ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সারাদেশেই এডিস মশার প্রকোপ বাড়ছে। পাশাপাশি চলতি বছরে আগের তুলনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থেমে থেমে রোদ ও বৃষ্টির এমন আবহাওয়ায় এডিস মশার বংশ বিস্তারে উপযুক্ত। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থাকতে পারে।

চলতি বছরের জুন থেকেই দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। এ বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এক হাজার ১৬১ জন এবং মারা যায় ১০ জন। ফেব্রুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৩৭৪ জন এবং মারা যায় তিন জন। মার্চ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৩৩৬ জন। এপ্রিলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৭০১ জন এবং সাতজন মারা যায়। মে মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৭৭৩ জন এবং মারা যায় তিন জন। জুন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় পাঁচ হাজার ৯৫১ জন এবং মারা যায় ১৯ জন। জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ১০ হাজার ৬৮৪ জন এবং মারা যায় ৪১ জন। আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ১০ হাজার ৪৯৬ জন এবং মারা যায় ৩৯ জন। সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ১১ হাজার ৬৯৭ জন এবং মারা যায় ৬০ জন।

ডেঙ্গুর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনায় দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক, জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জরুরি ১২ নির্দেশনা দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২৪ সালে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৫৭৫ জন।

২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। ২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছে মোট ২৮১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজন মারা গেছে এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬৬৪ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে সহজেই বিভিন্ন পাত্রে পানি জমে ডেঙ্গুর বংশ বিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। বাসা বাড়ির ছাদে কিংবা বেজমেন্টে, সড়কে, বাড়ির আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা পলিথিন, প্লাস্টিকের পাত্র, ডাবের খোসাসহ বিভিন্ন পাত্রে যে পানি জমে সেসব জায়গা থেকে এডিস মশার বংশ বিস্তার হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গুরোগী বাড়ছে।

বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ চলমান আছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর আরও দুই মাস আমাদের ডেঙ্গুর ধকল পোহাতে হবে। এখন বৃষ্টি হচ্ছে, আবার রোদও আছে, এমন হলে ডেঙ্গু উৎপাদন হতেই থাকবে। ফলে এখন যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আছে, সেটা কমার লক্ষণ নেই, বরঞ্চ বাড়ার আশঙ্কা আছে।

তিনি বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে, স্বেচ্ছাসেবকের নিয়ে পরিষ্কার-পরিছন্নতার জন্য যেভাবে কাজ করা দরকার, সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। গতানুগতিক পন্থায় কিছু রাসায়নিক ধোঁয়া দিচ্ছে, তাদের জনবলও সীমিত। আর ধোঁয়া নির্ভর মশা নিয়ন্ত্রণে কোনো দেশে কখনও সফল হয়নি। কিছু মশা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, আবার বাড়ছে, এভাবে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। মশা নিয়ন্ত্রণে আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/