• মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০০ অপরাহ্ন

সামুদ্রিক ও নদী সম্পদ সংরক্ষণে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার : মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া / ৩৩ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফ বলেছেন, দেশের নদী ও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় সরকার ইতোমধ্যে বহুমুখী ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সমুদ্র থেকে টেকসই মাছ আহরণ নিশ্চিত করাই অন্যতম লক্ষ্য।

আজ সকালে মহিপুরে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মৎস্য অধিদপ্তর পটুয়াখালী এবং ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প আয়োজিত ‘অবৈধ ট্রলবোটের সরঞ্জামাদি স্বেচ্ছায় অপসারণ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, নদী ভরাট ও দূষণ প্রতিরোধে প্রস্তুতকৃত বিস্তারিত তালিকা নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং নদীর খননকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলমান থাকবে। এছাড়া, নদী ও সমুদ্রপথে সৃষ্ট ডুবোচর শনাক্তে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে নির্দেশনা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, অবৈধ ট্রলবোট ব্যবহার করলে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসময় তিনি এটির ব্যবহার বন্ধ হলে সমুদ্রে মাছের উৎপাদন ও আহরণ উভয়ই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মহাপরিচালক বলেন, ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গভীর সমুদ্র থেকে টুনা মাছ আহরণের জন্য গবেষণা চলমান রয়েছে এবং বেসরকারি খাতকেও এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, মৎস্যজীবীদের জন্য ভিজিএফ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের মাছ ধরার সময়সূচি সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “সমন্বিত প্রচেষ্টা, কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণে সফলতা অর্জিত হবে।’ একসাথে কাজ করলে বাংলাদেশ সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সভায় অন্যান্য বক্তারা ভিজিএফ সহায়তা বৃদ্ধি, নদী খনন, ডুবোচর চিহ্নিতকরণ এবং ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।

এসময় জেলে প্রতিনিধি সিদ্দিক মাঝি সমুদ্রে অবরোধ চলাকালীন সরকার থেকে প্রাপ্ত সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া এবং বৈরী আবহাওয়াতে জেলেদের সমুদ্র থেকে নিরাপদভাবে সরিয়ে নিতে আধুনিক নৌযান চালু করার দাবি জানান।

মতবিনিময় সভায় মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের পরিচালক মোঃ আলফাজ উদ্দীন শেখের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো: আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইমাম হাসান আজাদ, পটুয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল  ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জুয়েল রানা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: কামরুল ইসলাম। এসময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, মৎস্যজীবীসহ  অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মতবিনিময় সভার আগে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল মহিপুর মৎস্য আড়ত পরিদর্শন করেন। এসময় জেলেরা দাবি করেন এ মৌসুমে সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়ছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে অনেক সময় ইলিশসহ অন্যান্য মাছের আহরণ কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে বলে মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/