• সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন

কবি নজরুলের পাশেই সমাহিত করা হবে ওসমান হাদিকে

দর্পন ডেস্ক / ২১ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিদ্রোহী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাহিত করা হবে জুলাই বিপ্লবী ও আধিপত্যবাদবিরোধী প্লাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইনকিলাব মঞ্চ থেকে এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হয়েছে ওসমান হাদির লাশ। বিমানবন্দরে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো তার কফিন গ্রহণ করেন জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

ইনকিলাব মঞ্চ জানায়, শরিফ ওসমান হাদিকে আজই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হচ্ছে না। তার লাশ বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে হিমাগারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। সেখানে শহিদ ওসমান হাদিকে রেখে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগে এসে অবস্থান নেবেন।

ইনকিলাব মঞ্চের বার্তায় বলা হয়, পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহিদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করা হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শনিবার বাদ জোহর তার জানাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজকের পরিবর্তে আগামীকাল মিছিলসহ ওসমান হাদির লাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।

বার্তায় আরও বলা হয়, ছাত্র-জনতা আজ ও আগামীকাল শৃঙ্খলার সঙ্গে আন্দোলন জারি রাখবেন, যেন কোনো গোষ্ঠী অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আন্দোলন স্তিমিত করতে না পারে। একইসঙ্গে সহিংসতা করার সুযোগও যেন না পায়।

ওসমান হাদির লাশ দেখার কোনো সুযোগ থাকবে না জানিয়ে ইনকিলাব মঞ্চ বলেছে, সবার নিকট শৃঙ্খলা বজায় রাখার এবং শহিদ ওসমান হাদির জন্য দোয়া পৌঁছানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ওসমান হাদি পরে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গড়ে তুলে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আলোচনায় আসেন। বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতেও নিয়মিত আমন্ত্রণ পেতে থাকেন তিনি। তার যুক্তিতর্কের অনেক ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার মাসখানেক আগে হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ওসমান হাদি। তিনি গত নভেম্বরে নিজের ফেসবুক পেজে বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোনকল করে এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ ক্যাডাররা তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে প্রাণনাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইনসাফের লড়াই থেকে পিছিয়ে যাবেন না তিনি।

১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় প্রচারে যাওয়া ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসী। রিকশায় থাকা হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাকে নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর দেখে সেখান থেকে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যায় সরকার। চিকিৎসকদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে যান হাদি। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যুর খবর জানান চিকিৎসকরা।

ওসমান হাদিকে গুলিতে জড়িত মূল সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখ। তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।

তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‍্যাব। তাদের মধ্যে ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা হাসি বেগম (৬০), স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু রয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/