ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিষখালি নদীর ভাঙনে কয়েকটি গ্রাম শতভাগ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিনের অব্যাহত ভাঙনে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া, ইসলামাবাদ, বৈশাখিয়া ও হদুয়া গ্রামের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা আরো কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে হদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হক সিকদার বলেন, ছোটবেলা থেকে নদীভাঙন দেখছি। এ পাড় ভাঙে, ওই পাড়ে চর পড়ে। এভাবে হারাতে হারাতে এখন আমরা নিঃস্ব। বসতবাড়ি, জমিজমা সব হারিয়েছি। আমাদের গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা সরাসরি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকেই গ্রামের অন্যত্র ঘর তৈরি করেছেন, আবার শহরে চলে গেছেন। আমি নিজেও কয়েকবার ঘরের স্থান পরিবর্তন করেছি। তবুও ভাঙন থেকে রেহাই পাচ্ছি না।
আরেক বাসিন্দা মো. মজিদ সিকদার বলেন, পঞ্চাশ বছর আগে বাবার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। তারপর নদীর তীর থেকে দূরে গিয়ে বাড়ি করেছিলাম। সেটাও হারিয়েছি। এখন আরো পেছনে গিয়ে কোনোমতে একটা ঘর করেছি। সেটাও এখন ভাঙনের মুখে। যে কোনো সময় নদীতে বিলিন হয়ে আবারও গৃহহীন হওয়ার আশঙ্কায় আছি।
তিনি আরো জানান, কয়েকবছর আগে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এরপর থেকেই একটু জোয়ার এলেই নদীর তীরের বাড়িঘর ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়। ফসল তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় বছরই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। একটি বেড়িবাঁধ থাকলে কৃষকরা তাদের ফসল নিয়ে চিন্তমুক্ত থাকতে পারতেন।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, আমাদের একটি টিম ভাঙন-কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। শিগগিরই সরকারের কাছে চাহিদা পাঠাব। আর যতদ্রুত সম্ভব বাঁধ পুনরায় নির্মাণসহ ভাঙন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করা হবে।
https://slotbet.online/