মুভি দেখে জন্মদাতা পিতা মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল হক ওরফে নোমানী হুজুরকে নিজের ঘরে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাঁর বড় ছেলে মো. রেদওয়ান(১৭)। ভোলায় ব্যাপক আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পর পুলিশ রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারী পুত্রকে গ্রেফতার করে আজ শনিবার বিকালে সাংবাদিক সম্মেলনে ভোলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল এ তথ্য প্রকাশ করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভোলা সদর চরনোয়াবাদ ৯নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হন আমিনুল হক হুজুর। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হালিমা বিনতে কামাল বাদী হয়ে ভোলা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৩, তারিখ ০৭/০৯/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড)।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার একাধিক দল তদন্ত শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ১২ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের ছেলে রেদেয়ানুল হকের হাতে কাটা দাগ দেখে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার দেখানো মতে বাড়ির পেছনের খালপাড় থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, অতিরিক্ত শাসনের ফলে ছেলে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে একবার নিজে আত্মহত্যা করতে যায়, সেখানে ব্যর্থ হয়ে বাবাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবা আমিনুল হক তাঁর অবাধ্য হওয়ার কারণে ছেলে রেদোয়ানকে তজুমদ্দিন উপজেলার মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মামার বাড়িতে বসে সে বাবাকে খুন করার জন্য প্লান করে। মোবাইলে বিভিন্ন মুভি দেখে অনুপ্রাণিত হয়। সে প্লানমতো অনলাইনে দারাজে ছুরি ক্রয় করে। এছাড়াও কালোজামা, ক্যাপ মামার দোকান থেকে আনে। ঘটনার দিন ঘড়ি মেপে কার্য সম্পাদন করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘরে ঢুকেই সে বাবাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে আমিনুল হক ছেলের কাছে মাপ চায়, তাঁকে খুন করতে নিষেধ করে। রেদোয়ান বলে, ঠিকাছে খুন করবো না বলে, ছুড়ি বের করতে গিয়ে হাত কেটে ফেলে। পরে গলায় কয়েক জাগায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করে ঘরের পেছন দিয়ে পালিয়ে যায়।
বর্তমানে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখার সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলে তদন্তাধীন রয়েছে।
https://slotbet.online/