বরিশালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে টানা এক মাস আন্দোলনের পর অবশেষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালক সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর। বুধবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের পরিচালকের কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এ আলোচনায় হাসপাতাল পরিচালক আগামী এক মাসের মধ্যে দাবিনুযায়ী দৃশ্যমান সংস্কারের আশ্বাস দেন। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি এবং আরও ১০-১২ জনের প্রতিনিধি দল। অন্যদিকে হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে ওয়ার্ড মাস্টারসহ কয়েকজন চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন রনি বলেন, “আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা ৫০ দিনের সময় বেঁধে দিলাম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংস্কারের একটি রূপরেখা দিয়েছে। এর মধ্যে দৃশ্যমান সংস্কার না হলে আবারও কঠোর আন্দোলনে নামবো। শুধু শেবাচিম নয়, সারাদেশের হাসপাতাল সংস্কার করতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল প্যাডে লিখিত অঙ্গীকার চাই।”
তিনি আরও বলেন, “এখন আমরা বরিশালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, স্কুল-কলেজে জনসংযোগ করবো। আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবো। হাসপাতালের সিন্ডিকেট ভাঙতেই হবে। শেবাচিমে কিছু সংস্কার হয়েছে, তবে আমরা পূর্ণাঙ্গ সংস্কার চাই। এখন সারাদেশে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের ডাক দেব।”
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর জানিয়েছেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। রোগী সেবার মান উন্নয়নে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে ডায়ালাইসিস মেশিন, সিটি স্ক্যান, এন্ডোস্কপি, কোলনস্কপি ও বিভিন্ন অপারেশন সেবা চালু হয়েছে। অকেজো ৯৫টি মেশিন সচল করা হয়েছে। জরুরি বিভাগে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালু, বহির্বিভাগ স্থানান্তর, ট্রলি ও টয়লেট সংস্কারসহ রোগী সেবার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিচালক জানান, আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হবে, ৫০ বেডের নতুন আইসিইউ এবং এমআরআই, ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হবে। দীর্ঘ মেয়াদে হাসপাতালটিকে ৩০০০ শয্যায় উন্নীত করা এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
https://slotbet.online/