উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হালকা দমকা বাতাস, উত্তরাঞ্চলের ঢলে নেমে আসা পানি এবং অমাবস্যার প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া জোয়ার ও টানা বর্ষণের ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার অন্তত সাতটি উপজেলার শতাধিক গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) থেকে শুরু হয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বলেশ্বর ও কচা নদীর টগড়া-চরখালী ফেরিঘাট এবং ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, নদীর পানি ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী, কাউখালী, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রভাব পড়েছে রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, মাছের ঘের, বসতবাড়ির আঙিনা, বাগান ও সবজিক্ষেতে। গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কচা, বলেশ্বর, কালিগঙ্গা, তালতলা, মধুমতি ও সন্ধ্যা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট বেড়েছে। এতে করে নদীভাঙনও বেড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শিপন চন্দ্র ঘোষ জানান, “বর্ষা ও জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে উঠতি আউশ ধান এবং রোপণকৃত আমনের বীজতলার জমি অন্তত এক সপ্তাহ পানিতে নিমজ্জিত থাকলে তা পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, “যেকোনো প্রকার ক্ষতি বা পানিবন্দি পরিবারকে সর্বাত্মক খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি। সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় রেখে জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মৎস্যচাষিদের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।”
স্থানীয়রা বলছেন, আগামী কয়েকদিন পানি না কমলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
https://slotbet.online/