রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের এক ঘণ্টার মধ্যে ভয়াবহ রূপ নেয় হাসপাতালের চিত্র। শত শত দগ্ধকে একের পর এক নেওয়া হয় হাসপাতালে। এত বেশি পোড়া রোগী নিয়ে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে দেখা যায়। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের পর দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে বিধ্বস্ত হয় বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ।
ফায়ার সার্ভিস এক খুদে বার্তায় জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর পায়। ১টা ২২ মিনিটে প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১৮ জন নিহত ও ১৬৪ জন আহতের খবর দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর পরই দগ্ধ ও আহতদের একের পর এক উদ্ধার করা শুরু হয়। নেওয়া হয় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচ, লুবনা, কুয়েত মৈত্রীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে। হাসপাতালে একের পর এক আসতে থাকে অ্যাম্বুলেন্স।
কেবল তাই নয়, গাড়ি বা অটোরিকশা করেও আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যান অনেকে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। স্বজনরা শিশু সন্তানের ছবি হাতে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটে বেড়ায়।
একজন শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘মেয়েটিকে ক্যাম্পাসে পাওয়া যাচ্ছে না। দ্বিতীয়বার আরেকজন ফোন করলেন যে লুবানা হাসপাতালে অনেকগুলো বাচ্চা এসেছে। আমি দৌড়ে এসে এখানে খোঁজ নিলাম। ওনাদের কাছে যে তালিকা আছে সেখানে আসলে সে নেই।’
আইএসপিআর বলছে, আহতদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৮ জন, বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০, সিএমএইচে ১৪, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতালে ১১, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ৬০ এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আহত হয়ে ভর্তি আছেন ১ জন।
দগ্ধদের কারও কারও অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অনেকের শরীর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে। আহত ও দগ্ধদের অনেকেরই রক্তের প্রয়োজন।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পরপর থেকেই সবাই প্রস্তুত ছিল। পুরো টিম তাদের রিসিভ করেছে। এটা একটা বড় দুর্ঘটনা। আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে।’
https://slotbet.online/