ছাব্বিশ কোটি টাকা ব্যয়ে অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণ হলেও সুফল পাচ্ছে না বরিশালবাসী। সিটি করপোরেশনের ভবনটির নির্মাণ এগারো বছর আগে শুরু হলেও বেশ কিছু কাজ বাকি। এদিকে, ৭ টি বিলে প্রকল্পের পুরো টাকা তুলে নিয়েছে দুই ঠিকাদার। এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে না পারলেও সিটি করপোরেশন বলছে ৫ আগস্ট ভবনটিতে ভাঙচুর ও লুটপাট হওয়ায় সংস্কার করতে সময় লাগছে।
বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উত্তর অংশে ১১ বছর ধরে নির্মাণ হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের এই পাঁচতলা ভবন। বাইরের দিকে রঙ করা অডিটোরিয়ামটি ২০১৮ সালে উদ্বোধন হলেও ভেতরের অনেক কিছুই অসমাপ্ত।
৫০০ আসনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিণ এই মিলনায়তনের দেয়ালে ফাটল, বাথরুম ফিটিংস নিম্নমানের। লেজার লাইট, ফোকাস লাইটসহ ঝাড়বাতি থাকার কথা থাকলেও সেসব নেই। বৈদ্যুতিক বোর্ডে মরিচা পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অডিটোরিয়াম নির্মাণে এ পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের ৮ জন নির্বাহী প্রকৌশলী এবং দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিলো। অডিটোরিয়াম চালু না হলেও ৭ টি বিলের মাধ্যমে মোট ২৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বিল তুলে নেয় ঠিকাদাররা।
বিসিসি সিনিয়র ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কেন যে শেষ হয় না তা বুঝি না। অথচ ব্যয় হচ্ছে সিটি করপোরেশনের কোটি কোটি টাকা। এটি নির্মাণে কত টাকা ব্যয় হবে, কবে কাজ শেষ হবে এর রহস্য আমরা খুঁজে পাচ্ছি না।’
বিসিসি ঠিকাদার অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক মো. মাসুদ বলেন, ‘এ পর্যন্ত অডিটরিয়ামের ৭টি বিলে ২৫ কোটি টাকারও বেশি বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভাউচার ও কোটেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত বিল নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জনগণের কোনো কাজে আসেনি। আমাদের দাবি হচ্ছে এ ঘটনার একটা সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স ঘিরে অনিয়মের সঠিক তদন্তের পাশাপাশি দ্রুত দ্রুত সব কাজ শেষ করে অডিটোরিয়ামটি চালুর তাগিদ সংস্কৃতিকর্মীদের।
এদিকে, ভবন নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের কোনো অভিযোগ আসেনি, দাবি নগর কর্তৃপক্ষের। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় অডিটোরিয়ামে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়, জানান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এ মুহূর্তে অডিটোরিয়াম চালু করা না গেলেও কিছু অংশ সংস্কার করে কয়েকটি দপ্তর স্থানান্তর করা হবে, জানান তিনি।
বিসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘২৪ এর ৫ আগস্ট এই নগর অডিটোরিয়াম ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। এখন এটি পরিত্যক্তের মতো পড়ে আছে। এখন আমাদের বিসিসি ভবনের কয়েকটি দপ্তর অডিটোরিয়াম ভবনে নেওয়া যায় কিনা আমরা সেটা ভেবে দেখছি। আমরা এক ও দুই তলা সংস্কার করে দাপ্তরিক কাজ চালাব। পরবর্তীতে মিলনায়তনের ব্যবস্থা করব। এখানে অনিয়মের সরাসরি কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।
এর আগে ২০২৩ সালে অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণের অর্থ লোপাটের একটি অভিযোগ জমা পড়ে দুর্নীতি দমন কমিশন।
https://slotbet.online/