ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মী এবং সাধারণ জনগণ। সেমবার (৭ জুলাই) দুপুরে চাচাড়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সুত্রে জানা গেছে, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদারকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এনে গত (৪ জুলাই) কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী তাকে বহিষ্কার করেন। এই ঘটনার পরপরই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও জনগণ ঐদিন রাতেই তজুমদ্দিনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার (৭ জুলাই) স্থানীয় চাচড়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে গতকাল রাত থেকেই ভোলায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শত শত নারী-পুরুষ এবং স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মীরা ইব্রাহিম হাওলাদারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে ভুল বুঝিয়ে ইব্রাহিম হাওলাদারকে বহিষ্কার করান।
মূলত ঘটনা হচ্ছে, চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপি নেত্রী দাবীকৃত ওই মহিলা চাচড়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে পরিষদের সচিব ইয়াজ উদ্দিনের কাছে ২শত ভিজিএফ চালের (স্লিপ কার্ড) দাবি করেন। সচিব তার দাবীকৃত ফ্লিপকার্ড দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন। এ সময় তার সাথে সচিবের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ওই নেত্রী নিচে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকা চালের জন্য অপেক্ষাকৃত মহিলাদের কাছ থেকে ফ্লিপকার্ড ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন। তা নিয়ে ওই মহিলাদের সাথে দাবিকৃত নেত্রীর হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তাকে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীরা মারধর করেনি। তাছাড়া ইব্রাহিম হাওলাদার এর বিরুদ্ধে তাকে মারধরের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ঐদিন ইব্রাহিম হাওলাদার এলাকাতেই ছিলেন না। তিনি ব্যবসায়িক কাজে ঐদিন ঢাকাতে অবস্থান করছিলেন। তার কোন নেতাকর্মীরাও তাকে মারধর করেনি।
চাচাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সবুজ তালুকদার বলেন, বিগত দিনে ইব্রাহিম হাওলাদার সাধারণ জনগণের পাশে ছিলেন। তাকে অন্যায় ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেতাকর্মী ও আমাদের জনগণের মাঝে ফিরিয়ে দেয়া হোক।
শাহে আলম নামে এক প্রতিবন্ধী বলেন, ইব্রাহিম হাওলাদার বিগত সময়ে আমাদের পাশে ছিলেন। তিনি আমাদের বাড়িতে চাল-ঢালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিয়েছেন। এই বহিষ্কার আমরা মানি না, মানবো না। ইব্রাহিম হাওলাদার কে আমরা চাইই-চাই।
চাচড়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দিন বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের কিছু দুষ্কৃতিকার বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে ইব্রাহিম হাওলাদার কে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা এ বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বহিষ্কারের প্রতিবাদে আজ বৃষ্টি অপেক্ষা করেই ইউনিয়ন বিএনপি ও স্থানীয় জনগণ বুসকার আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে জড়ো হয়েছেন। সকালের একটাই দাবি ইব্রাহিম হাওলাদার এর বিরুদ্ধে আনীত ঘোষ কার আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
চাচড়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা মোফাজ্জল সিকদার বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে অনেক মামলা ও হামলার শিকার হয়েছেন ইব্রাহিম হাওলাদার। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইব্রাহিম হাওলাদার কে বহিষ্কার করা হয়েছে। ইব্রাহিম হাওলাদার এর মত সৎ এবং নিষ্ঠাবান নেতার বিকল্প নাই। তাকে যে বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়েছে আমরা তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে আনীত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আমির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নোমান হোসেন, চাচড়া ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভানেত্রী বিবি রহিমা, ঝর্ণা বেগম প্রমুখ।
https://slotbet.online/