বিশিষ্ট ইসলামী সঙ্গীতশিল্পী মাওলানা আইনুদ্দীন আল আজাদের চলে যাওয়ার দেড় দশক আজ। ১৫ বছর আগে এই দিনে (১৮ জুন) নাটোরে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।
ওইদিন ছিল শুক্রবার। রাজশাহীতে একটি প্রোগ্রামে যাচ্ছিলেন তৎকালীন তুমুল জনপ্রিয় ইসলামি সঙ্গীতশিল্পী মাওলানা আইনুদ্দীন আল আজাদ। নাটোরের লালপুরে তাকে বহনকারী প্রাইভেটকারটি একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চালকসহ তিনি মারা যান।
তিনি জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ এর প্রতিষ্ঠাতা। ছিলেন ‘সুরকেন্দ্রে’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক। দামামা, অবগাহন, যদি, বদলে যাবে এই দিন, অচিন পাখী, কবর পথের যাত্রীসহ তার প্রায় ৫০টি গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এখনো তাঁর ইসলামি গানগুলো মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত।
মাওলানা আজাদ ১৯৭৭ সালের ০১ মার্চ ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানার হাজরাতলা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রাম থেকেই শুরু হয় শিক্ষার হাতেখড়ি। অতঃপর দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে তিনি অধ্যায়নের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছোটবেলা থেকেই ছিল তাঁর সুর ও সংগীতের প্রতি আগ্রহ। ইসলামি সংগীতের প্রতি অসামান্য ঈর্ষা ও ভালোবাসা থাকাতেই তিনি হাঁটতে শুরু করেন ইসলামি সাংস্কৃতির পথে।
যখন দেশব্যাপী অপসংস্কৃতির সয়লাব। অশুদ্ধ শব্দ ও সুরে পৃথিবী ভরাট। ঠিক তখনই তিনি কিশোর ও তরুণ সমাজের অবক্ষয় রোধে কাজ শুরু করেন। তিনি গান, বাদ্য ও উদ্দাম নৃত্য-গীতের মোকাবেলায় শুদ্ধ ও নির্মল নাশিদ-সঙ্গীত পরিবেশন করতে শুরু করেন। পাশাপাশি ওয়াজ-নসীহত, বক্তৃতাও দিতে থাকেন।
তার একনিষ্ঠ খুলুসিয়াত প্রচেষ্টার দরুণ খুব অল্পদিনের মধ্যেই তার সুর ও কথায় অসংখ্য মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায়। দেশ-বিদেশে তার অনেক ফ্যান ফলোয়ার তৈরি হয়। হাজারো মানুষের ভক্তি ও ভালবাসায় সিক্ত হয়ে পূর্ণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে সামনের এগিয়ে যান। এই পথ চলার ধারাবাহিকতায় বড় গুণীজনদের পরামর্শে তৃণমূল পর্যায়ে সুস্থ সাংস্কৃতিক ভিত গড়ে তোলার ইচ্ছে পোষণ করেন। এই লক্ষ্যেই ২৮ মে ২০০৪ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’।
https://slotbet.online/