বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীর। রোববার দুপুরে র্শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে উপচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করতে দক্ষিণাঞ্চল অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
ক্যাম্পাস সুত্রে জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবীতে আন্দোলন করছিলেন। ৪ দফার অন্যতম ছিলো ফেব্রুয়ারীতে অবসরে যাওযা রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারন। শনিবার রাজধানীতে সিণ্ডিকেট সভায় এ দাবী মেনে নিয়ে উপচার্য ড. শুচিতা শারমিন নিজেই রেজিষ্ট্রারের দায়িত্ব নিয়েছেন। অন্য দাবীগুলো মেনে নিতে শিক্ষার্থীদের শর্ত দেওয়া হয়।
এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় রোববার বেলা দেড়টায় র্শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে এক দফা ঘোষনা দেন। এর আগে বেলা ১১টায বাসভবনে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জরুরী সিন্ডিকেট সভা করা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি ও দাবি-দাওয়া নিয়ে বসতে চাই’।
তিনি আরো জানান, মুচলেকা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলা ও সাধারণ ডায়েরি থেকে মুক্তি পাবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনে জুলাই আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন,“গত ১৮ দিন ধরে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। উপাচার্য একবারের জন্যও আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেননি। এটি শুধু অবহেলা নয়, একেবারে সরাসরি গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করা। বিশ্ববিদ্যালয় একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, এখানে স্বৈরাচারী মানসিকতার কোনো জায়গা নেই’।
ইউজিসি বা শিক্ষা উপদেষ্টা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে সুজয় বলেন, যৌক্তিক আন্দোলনের করায় উপচার্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে দফায় দফায় মামলা-জিডি করেন। স্বৈরাচারের দোসরদের তিনি আইনের আওতায় আনার বদলে করেন পুরস্কৃত। ক্যান্সারে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সাহায্যের আবেদন ৫ মাসেও তিনি খুলে দেখেননি।
বরিশাল মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, “গত তিন সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা ন্যায্য দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। উপাচার্য চাইলে বহুবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসতে পারতেন, আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারতেন। তিনি একবারও সে চেষ্টাটুকু করেননি। তার এখন অন্তিমপর্ব। আমরা তার সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাচ্ছি না। আমরা শুধু বলতে চাই আপনি বাস্তবতা মেনে নিন।
জানা গেছে, শনিবার রাজধানীতে ববির অতিথিশালার সিণ্ডিকেট সভায সিদ্ধান্ত হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত রেজিস্টার মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অপসারন করা হবে। সিণ্ডিকেট থেকে অপসারিত ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মুহসিন উদ্দিনকে ফেরাতে আদালতের নির্দেশনা অনুসরন হবে, শিক্ষার্থীরা মুচলেকা দিলে মামলা ও জিডি প্রত্যাহার এবং ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সনাক্তে ১ সদস্যের কমিটি গঠন।
তবে ক্যাম্পাসের বদলে রাজধানীতে সিণ্ডিকেট সভা করায ভিসিবিরোধী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কোন শিক্ষক প্রতিনিধি সভায় অংশ নেননি।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবীগুলো হলো- ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপমানজনক অপবাদ প্রত্যাহার ও সিণ্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের পদে পুনর্বহাল, অবসরের পর চুক্তিভিত্তিক নিযোগপাপ্ত রেজিষ্ট্রার মো: মনিরুল ইসলামকে অপসারন, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান উন্নয়ন না করে একের পর বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহন ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করায় উপচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। গত ২৭ এপ্রিল রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালা দেয় আন্দোলনকারীরা। ###
https://slotbet.online/